9.7 C
Munich
Thursday, April 24, 2025

কোন রোগের কোন ঔষধ লাগে আইসি আনোয়ার ভালই জানেন!

Must read

সুমন ভৌমিকঃ ঢাকাসহ ময়মনসিংহের বেশ কিছু পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে ৮নং ওয়ার্ডের রমেশ সেন রোডে নিষিদ্ধ পল্লীতে কালোবাজারে শত শত লিটার দেশীয় বাংলা মদ এবং চুলাই মদ বিক্রি নিয়ে ব্যাপক খবর প্রকাশিত হয়। ব্যাপক খবর প্রকাশিত হওয়ার কারনে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ (পিপিএম-বার) কালোবাজারে অবৈধ মদ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহন করেন। তিনি নগরের ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেন কালোবাজারে অবৈধ মদ বিক্রি বন্ধ করে মদ বিক্রেতাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার জন্য।
নগরের ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ওসি শাহ কামাল আকন্দের কঠোর নির্দেশ পেয়ে ফাঁড়ির টিম নিয়ে বেশ কয়েকবার নিষিদ্ধপল্লীতে অভিযান চালিয়ে শত শত লিটার অবৈধ মদসহ মদ ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে মামলা দেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে এখনও কয়েকজন কারাগারে রয়েছে। কিন্তু এতেও কাজ হচ্ছে না দেখে ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন চিন্তিত হয়ে যান।

কাজ না হওয়ার কারনগুলো হলো-সূত্র জানায়, ৮নং ওয়ার্ডে নিষিদ্ধ পল্লীতে কালোবাজারে শত শত লিটার দেশীয় বাংলা মদ ও চুলাই মদ অবৈধ ভাবে বিক্রির জন্য রয়েছে অর্ধশতাধিক হকার। এই হকারদের নিয়ন্ত্রণ করে নিষিদ্ধপল্লীর কিছু নাম জানা গডমাদার। এই গডমাদার ব্যক্তিগুলো ফেন্সিডিল থেকে শুরু করে সকল মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। যাদের দাপটে এই অবৈধ মদ এর ব্যবসা দেদারসে চলছে। কালোবাজারে বিক্রি অবৈধ মদ নিয়ন্ত্রণকারী গডমাদাররা ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত লিটার অবৈধ চুলাই মদ দালালদের মাধ্যমে নিষিদ্ধপল্লীতে ঢুকিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে জমা রাখে। এছাড়া দেশীয় বাংলা মদ কাউন্টার থেকে অবৈধ পন্থায় শত শত লিটার মদ বের করে এই নিষিদ্ধপল্লীতেই বিভিন্ন বাড়িতে মজুদ করে। তারপর গডমাদারদের নিয়ন্ত্রিত হকারদের মাধ্যমে দিন-রাত সেই সকল অবৈধ মদ সাপ্লাই হয় ৮নং ওয়ার্ড এলাকাসহ নগরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে। এর ফলে ৮নং ওয়ার্ডসহ নগরে মাতালদের উৎপাত বেড়ে যায়। যখন এই অবস্থা তখন ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ফাঁড়ির টিম নিয়ে বেশ কয়েকবার নিষিদ্ধপল্লীতে অভিযান চালিয়ে শত শত লিটার অবৈধ মদসহ মদ ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। কিন্তু যখন দেখেন এতেও কাজ হচ্ছে না, তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং সিদ্ধান্ত নেন এর শেষ দেখে ছাড়বেন। তিনি লক্ষ্য করেন নিষিদ্ধপল্লীতে বিভিন্ন বাড়িতে জমাকৃত শত শত লিটার অবৈধ মদ এর উৎসগুলো বন্ধ হচ্ছে না। নিষিদ্ধপল্লীতে বাহির থেকে অবৈধ ভাবে মদ ঢুকছে এবং কাউন্টার থেকেও অবৈধ পন্থায় মদ বের হচ্ছে। আর যখন নিষিদ্ধপল্লীতে এক বাড়িতে অভিযান চালায়, সেই অভিযানের খবর পেয়ে অন্য বাড়ির জমাকৃত অবৈধ মদ ড্রেনে অথবা বাথরুমে ফেলে দেয়। ফলে কালোবাজারে অবৈধ মদ বিক্রেতা অন্য হকারদের এবং ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে পারছেন না। তখন চৌকস ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ৮নং ওয়ার্ডের নিষিদ্ধপল্লীতে কালোবাজারে অবৈধ মদ বিক্রি বন্ধ করতে ছক কসেন এবং এই রোগের ঔষধ কি লাগবে তা বুঝে ফেলেন। তিনি নিষিদ্ধপল্লীর ভিতরে বাহির হতে অবৈধ মদ যেন না ঢুকে এর জন্য ফাঁড়ির কনস্টেবল হিমেলকে দায়িত্ব দেন। হিমেল নিষিদ্ধপল্লীতে সঠিক দায়িত্ব পালন করায় বাহির হতে অবৈধ মদ ঢুকতে পারে নাই। আর কাউন্টার থেকে অবৈধ পন্থায় মদ বের হয়ে নিষিদ্ধপল্লীর বিভিন্ন বাড়িতে জমা না হয় সেই জন্য ফাঁড়ির কনস্টেবল সাইফুলকে দায়িত্ব দেন। সাইফুল নিষিদ্ধপল্লীতে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করায় কাউন্টার থেকে অবৈধ পন্থায় মদ বের হয়নি। ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন অবৈধ মদ এর উৎস বন্ধ করে দেয়ার ফলে ৮নং ওয়ার্ডের নিষিদ্ধপল্লীতে কালোবাজারে শত শত লিটার অবৈধ পন্থায় দেশীয় বাংলা মদ এবং চুলাই মদ মজুদ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মাতালদের উৎপাত আর দেখা যায় না।

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন তার যোগ্যতা ও দক্ষতার গুনে তিনি সফল হয়েছেন। এর আগে ৮নং ওয়ার্ডে কালোবাজারে অবৈধ মদ বিক্রি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে কেউ সফলতা পায়নি। তবে ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য দিয়ে কালোবাজারে অবৈধ মদ ব্যবসা বন্ধ রাখার ব্যবস্থাটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এর চেয়ে ভাল হবে সকল অবৈধ মদ ব্যবসায়ী ও গডমাদারদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। তিনি জেলা গোয়েন্দা সংস্থায় থাকাকালে প্রচুর সুনাম কুড়িয়েছেন।

নগরের ৮নং ওয়ার্ডবাসী জানান, ১নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন যা দেখিয়েছেন বলা বাহুল্য। এর আগে কোন ইনচার্জ এভাবে পুরোপুরি কালোবাজারে অবৈধ মদ বিক্রি বন্ধ করতে পারেনি। আমরা আনোয়ার হোসেন এর সার্বিক সফলতা কামনা করি। কিন্তু এই সফলতা পুলিশ প্রশাসনে কতদিন ঠিকে থাকবে এটাই এখন দেখার বিষয়।

 

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article